মূল পাতা আন্তর্জাতিক উপমহাদেশ ভারত কখনোই ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ছিলো না : আসামের পর্যটনমন্ত্রী
রহমত নিউজ ডেস্ক 27 September, 2023 02:48 PM
আসাম সরকারের জনস্বাস্থ্য কারিগরি, কর্মসংস্থান, স্থানীয় উদ্যোগ এবং পর্যটনমন্ত্রী জয়ন্ত মাল্লা বড়ুয়া বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ নয়। ভারত কখনোই ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ছিলো না। ধর্মনিরপেক্ষতা একটি বিদেশি ধারণা, যা কংগ্রেস ভারতীয় সংবিধানে প্রবর্তন করেছিল। ভারতের সনাতন সংস্কৃতিকে কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ দিয়ে প্রতিস্থাপিত করেছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলে। এর আগে, গত সপ্তাহে, ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধনের দিনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার সংবিধানের প্রথম সংস্করণ নতুন করে প্রকাশ করে। সেই সংস্করণে ‘ধর্মনিরপেক্ষ‘ এবং ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দুটি ছিল না। এই দুটি শব্দ ১৯৭৬ সালে সংবিধান সংশোধন করে ঢোকানো হয়েছিল। বিজেপি আবার ধীরে ধীরে জনমত তৈরি করার চেষ্টা করছে যে এই শব্দ দুটি ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে বাদ দিতে হবে।
কয়েক মাস ধরে হিন্দুধর্মের পরিবর্তে সনাতন ধর্মকে ভারতের প্রধান ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করার পক্ষে বক্তব্য রাখছেন হিন্দু সংগঠনের নেতারা এবং বিজেপির নেতৃত্ব। হিন্দুধর্মের মধ্যে নানান ধারা রয়েছে। সেই ধারাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গোঁড়া ধারা, যা ব্রাহ্মণ্যবাদী বর্ণ ব্যবস্থায় (কাস্ট সিস্টেম) বিশ্বাসী, তেমনই ধারা সনাতন। সনাতন ধর্ম পুরোপুরি সংস্কারবিমুখ এবং সনাতনীরা বিশ্বাস করেন, প্রাচীন মনুসংহিতায় (হিন্দুধর্মীয় অনুশাসন) যে বর্ণব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, সেই ব্যবস্থাই ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই কারণেই এর নাম সনাতন ধর্ম। হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী সংগঠন এবং নেতৃত্ব বর্তমানে সনাতন ধর্মের প্রচার শুরু করেছেন ভারতে।আসামের মন্ত্রী কংগ্রেস পার্টিকে ভারতের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করে ধ্বংস করার অভিযোগ করেছেন।
এর আগে, কংগ্রেস দাবি করেছিল যে সংবিধানের নতুন কপিগুলো যা সংসদ সদস্যদের নতুন সংসদ ভবনে বিতরণ করা হয়েছিল, তাতে ভারতের প্রস্তাবনায় উল্লেখিত ‘সমাজতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন সংসদ ভবনে প্রবেশের দিনে লোকসভায় কংগ্রেসের দলীয় নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেছিলেন, সংবিধানের যে নতুন কপিগুলো আমাদের দেওয়া হয়েছিল, যেটি নিয়ে আমরা (নতুন সংসদ ভবনে) প্রবেশ করেছি, তার প্রস্তাবনায় “সমাজতান্ত্রিক” ও “ধর্মনিরপেক্ষ” শব্দ নেই। তাদের (বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার) উদ্দেশ্য সন্দেহজনক। সংবিধানের প্রস্তাবনায় এই পরিবর্তন কৌশলে করা হয়েছে। এটা আমার জন্য চিন্তার বিষয়। আমি এই বিষয়টি উত্থাপন করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমি এই বিষয়টি উত্থাপন করার সুযোগ পাইনি।
গত কয়েক দিনে একদিকে ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ বাদ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল শুরু করেছেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা এবং অন্যদিকে সনাতন ধর্ম ফিরিয়ে আনার পক্ষে বক্তব্য রাখছেন বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতৃত্ব। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে, সনাতন ধর্ম ফিরিয়ে আনার বিপক্ষে সওয়াল করেছেন ভারতের মূল হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রধান মোহন ভাগবত।